রোজা ভাঙ্গার কারন/অনুমতি কি কি

 রোজা ভাঙ্গার কারন/অনুমতি কি কি


যদি এমন অসুস্থ হয়ে পড়ে যে রােজা রাখার শক্তি নেই বা রােজা রাখার দ্বারা অসুস্থতা বেড়ে যাবে , তাহলে তার জন্য রােজা না রাখার অনুমতি রয়েছে । তবে হ্যাঁ , যখনই সুস্থ হয়ে যাবে , তখনই তার ওপর রােজা কাজা করে নেওয়া ওয়াজিব । ( আপকে মাসায়েল : খ . ৩ , পৃ . ২০২ ) 

যে ব্যক্তি এমন দুর্বল হয়ে যায় যে রােজা রাখার শক্তি নেই । ( আপকে মাসায়েল : খ . ৩ , পৃ . ২০৩ ) 

 এমন ক্ষুধা বা পিপাসা লাগে যে প্রাণ চলে যাওয়ার উপক্রম হয়ে যায় । ( আলমগিরি : খ . ১ , পৃ . ২০৭ ) 

 গর্ভধারিণী বা স্তন্যদানকারিণী মহিলা যদি নিজের অথবা নিজের বাচ্চার প্রাণপাতের আশঙ্কা করেন , তাহলে তাঁর জন্য রােজা ভেঙে ফেলা জায়েজ আছে । ( আলমগিরি : খ . ১ , পৃ . ২০৭ ) 

 রােজা থাকার কারণে যদি জীবনযাপনের সামগ্রী উপার্জন করতে দুর্বল হয়ে যায় , তাহলে তার জন্য রােজা ভেঙে ফেলার অনুমতি রয়েছে । তবে তা পরে কাজা করে নিতে হবে । তা - ও সম্ভব না হলে ফিদিয়া আদায় করবে এবং প্রতি রােজার পরিবর্তে সদকায়ে ফিতর পরিমাণ দান করে ফিদিয়া আদায় করবে । ( শামি : খ . ৩ , পৃ . ৪০০ )

অনুরূপভাবে ফসল কর্তন করার ক্ষেত্রে । যদি রােজা থাকা অবস্থায় ফসল কর্তন করা সম্ভব না হয় । অন্যদিকে দেরি হলে ফসল নষ্ট হয়ে যাবে । তাহলে রােজা না রাখার অনুমতি আছে এবং অন্য সময় কাজা করে নেবে । ( শামি : খ . ৩ , পৃ . ৪০০)

রোজা মকরুহ কারন কি কি | যে সব কারনে রোজা মকরুহ হয়

১. ক) মিথ্যা বলা। (খ) মিথ্যা সাক্ষি দেওয়া। (গ) গিবত করা বা দোষচর্চায় লিপ্ত থাকা। (ঘ) মিথ্যা কছম করা। (ঙ) অশ্লীল কথা বলা বা অশ্লীল কাজ করা। (চ) জুলুম করা। (ছ) কারো সঙ্গে শত্রুতা রাখা। (জ) পরনারীর প্রতি দৃষ্টি করা, তাদের সঙ্গে মেলামেশা করা। (ঝ) সিনেমা দেখা—সবই নাজায়েজ। উপরোক্ত কাজ ছাড়া সব গোনাহর কাজ থেকে বিরত থাকা একান্ত জরুরি। এসব কারণে রোজা ভঙ্গ হয় না, তবে মাকরুহ হয়। অবশ্য সওয়াব কম হয়। (জাওয়াহিরুল ফাতাওয়া : খ. ১, পৃ. ২২; জাওয়াহিরুল ফিকহ : খ. ১, পৃ. ৩৭৯; বুখারি, হাদিস নম্বর ১৯০৩)


২. কোনোরূপ অপারগতা ছাড়াই কোনো বস্তু আস্বাদন করা বা চর্বণ করা। (শামি : খ. ৩, পৃ. ৩৯৫)


৩. অনন্যোপায় ছাড়াই কোনো কিছু চর্বণ করে শিশুর মুখে দেওয়া। (ফাতহুল কাদির : খ. ২, পৃ. ৩৪৯)


৪. একান্ত প্রয়োজন ছাড়া কেনাবেচার সময় মধু কিংবা তেলের স্বাদ আস্বাদন করা। (আলমগিরি : খ. ১, পৃ. ১৯৯)


৫. সঙ্গম বা বীর্যপাতের আশঙ্কা থাকা সত্ত্বেও স্ত্রীকে চুমু দেওয়া। (আলমগিরি : খ. ১, পৃ. ২০০)


৬. মুখে অধিক পরিমাণ থুতু একত্র করে গিলে ফেলা। (বিনায়াহ : খ. ৪, পৃ. ২৯৪)


৭. বেশি ক্ষুধা বা পিপাসার কারণে অস্থিরতা প্রকাশ করা। (শামি : খ. ৩, পৃ. ৪০০)


৮. মাজন, কয়লা, গুল, টুথপেস্ট ব্যবহার করা। (জাওয়াহিরুল ফিকহ : খ. ১, পৃ. ৩৭৯)


৯. অহংকারের জন্য সুরমা লাগানো বা গোঁফে তেল লাগানো। (আলমগিরি)


১০. পায়খানার রাস্তায় পানি দ্বারা এত বেশি ধৌত করা যে ভেতরে পানি চলে যাওয়ার আশঙ্কা হয়। (আলমগিরি : খ. ১, পৃ. ১১৯)


১১. ক্ষতির আশঙ্কা হলে শ্রমিকের জন্য মালিকের অনুমতি ছাড়া রোজা রাখা।


১২. প্রয়োজন ছাড়া ডাক্তারের মাধ্যমে দাঁত তোলা মাকরুহ। তাতে যদি রক্ত বা দাঁতে লাগানো ওষুধ পেটে চলে যায়, যা থুতুর সমপরিমাণ বা তার চেয়ে বেশি হয়, তাহলে রোজা ভেঙে যাবে। (আহসানুল ফাতাওয়া : খ. ৪, পৃ. ৪২৬)


১৩. এমন কোনো কর্ম করা, যা শরীরকে দুর্বলতার দিকে নিয়ে যায়, তা মাকরুহ। (শামি : খ. ৩, পৃ. ৪০০)


১৪. রোজাদারের জন্য অজু ছাড়া কুলি করা মাকরুহ। (আল-ওয়াল ওয়ালিযিয়্যাহ : খ. ১, পৃ. ২২৭)

No comments:

Post a Comment