১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে হেমায়েত বাহিনীর কিছু কথা - 1971 mukti juddho about hemayet bahini

এই বুইড়া ব্যাটারে চিনেন...!!!

চিনেন না মনে হয়। চিনায়ে দেই। ব্যাটা ছিল মিলিটারির হাবিলদার। ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে চাকরি করতো। লোকটা মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেওয়ার অপরাধে রাজাকাররা তার বৌরে রেইপ করার হুমকি দিছিল। লোকটা বাড়িতে আসার জন্য যুদ্ধের ময়দান থেইকা রওনা দিল। আইসা দেখলো তার বউ গলায় দড়ি দিসে। বাচ্চারা একজনও জিন্দা নাই। সেই যে লোকটা বাড়ি ছাইড়া গেল,দেশ স্বাধীন না কইরা সে বাড়ি আসে নাই। তারপর,লোকটা পাচ হাজার মুক্তির এক ফৌজ বানাইলো, বরিশাল, ঝালকাঠি, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, শরিয়তপুর আর বাগেরহাটে এরা যুদ্ধ কইরা বেড়াইতো। একদিন যুদ্ধের মধ্যে একটা বুলেট লোকটার গালের একপাশ দিয়া ঢুইকা আরেক দিক দিয়া বাইর হয়া গেল। আটটা দাত পইড়া গেল। দর দর কইরা রক্ত পড়তাসিলো। লোকটা যুদ্ধ থামায় নাই। ঐ যুদ্ধে পাকিস্তানি বাহিনীরে হারায়া তারপর সে ব্লীডিংয়ের ঠ্যালায় বেহুশ হয়া গেসে।
কিন্তু হারে নাই। এই বুইড়ার নাম হেমায়েত উদ্দিন। বাংলাদেশের না খালি, গোটা মডার্ন মিলিটারি হিস্ট্রির অন্যতম গেরিলা লিজেন্ড। চিন্যা রাখেন। পাকিস্তানিগো গাইল দেয়ার সময় হয়তো কামে লাগবো না, তয় নিজের পরিচয় হাতড়াইতে গেলে কামে লাগতে পারে। এই লোকটা ঘুমায়ে গেসে।অনন্ত ঘুম। কোনো মঞ্চ শ্রদ্ধা করেনি তার নাম। এই মাটিতে এইরম আরো অনেক হেমায়েত ঘুমায়। এইটা হেমায়েতগো দেশ, কারো বাপের না, কারো জামাইয়েরও না।
বি.দ্র. মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন লেখায় হেমায়েত বাহিনীর কথা পড়েছি। এমন একজন মানুষ চলে গেলেন ,অথচ আমরা কতজনই বা জানতে পারলাম? কালকে এই পোস্টটা না দেখলে আমি নিজেও জানতাম না। আমরা খান হেলালদের মত বীরদের(!) চিনি, কিন্তু হেমায়েত উদ্দিনের মত মানুষদের শ্রদ্ধা জানাতে অক্ষম...!!!

No comments:

Post a Comment