সাজনা গাছের পাতা ও সাজনা এর বিষ্ময়কর উপকারীতা সম্পর্কে জানলে আপনি অবাক হয়ে যাবেন

#সাজনা গাছের পাতা ও সাজনাঃ- এর বিষ্ময়কর উপকারীতা সম্পর্কে জানলে আপনি অবাক হয়ে যাবেন। আল্লাহর এই নেয়ামত সম্পর্কে সবার জানা দরকার।
আমাদের সকলের পরিচিত এই গাছটির নেয়ামত সম্পর্কে, ৮০% লোকে জানেন না। আসুন জেনে নিই কি সেই বিষ্ময়কর উপকারীতা!!!

সাজনা গাছের মধ্যে হাজার হাজার ঔষধি গুণা গুন আছে, যা জানতে পারলে আমাদের সকলের উপকারে আসবে ইনশাল্লাহ। সাজনা, সাজনা গাছের পাতার - মাধ্যে আল্লাহ তালা ৩০০ রোগের ঔষধ দিয়াছেন, তার মধ্যে বর্তমানে ডায়বেটিস, গেঁজ, আলসার এবং কেন্সার রোগের কোষ ধংস করার বড় গুন আছে।
১০০ গ্রাম সাজনা পাতার মধ্যে

১. দই এর চেয়ে ৯ গুন প্রটিন বেশি আছে।
২. গাজরের চেয়ে ১০ গুন বেশি ভিটামিন এ আছে।
৩. কলার চেয়ে ১৫ গুন বেশি পটাশিয়াম আছে।
৪. দুধ এর চেয়ে ১৭ গুন বেশি কেলসিয়াম আছে।
৫. কমলার চেয়ে ১২ গুন বেশি ভিটামিন সি আছে।
৬. পালং শাক থেকে ২৫ গুন বেশি আয়র্ন আছে।

সাজনা গাছের পাতা শাক হিসাহে অনেক জনপ্রিয়। যা মানব শরীলের জন্য অনেক প্রয়োজন। বর্তমান বিস্বে এই গাছের পাতা অনেক চাহিদা, আমার আশা এবং বিস্বাস খুব তারা তারি চা পাতার মত সাজনা পাতা ও আমাদের দেশ থেকে রপ্তানি হবে। আমার পোস্টের মাধ্যে নিচের ছবি গুলো দেখে এবং পড়ে সাজনা গাছের গুনা গুন সম্পর্কে আর ও জানতে পারবেন।

আর হ্যা সাজনা গাছের পাতা অবশ্যই খাওয়া যায়, অন্য শাকের মতই ভাজি করে খাওয়া যায়, সাধও অনেক ভালো।। অনেক হেসি/হেচি/পানি কলসের শাকের মত, খুব টেষ্টি।।

এছাড়াও সাজনার পাতা টেলে পেয়াজ কুচি রসুন , কাচা ঝাল হালকা তেলে হলুদ লবন দিয়ে ভেজে গরম ভাত দিয়ে খেয়ে দেখতে পারেন, এতে শরীরের পানি যমা গায়ে ব্যাথা ইনশাল্লাহ কমে যাবে, সাত থেকে আট দিন খেতে হবে যাদের শরীরে পানি যমে পা ফুলে খুব তাড়াতাড়ি ভালো হবে ।

সাজনা গাছ লাগানো অনেক সহজ, সাজনা গাছের ডালা সমান ভাবে কেটে লাগিয়ে দিলে হয়ে যাবে ইনশাল্লাহ। তাই আমার বিশ্বাস, আপনারা প্রতেকে একটি করে গাছ আপনার বাড়ি কিংবা রাস্তা ঘাটে লাগাতে পারেন। আল্লাহ আমাদের সকলকে হেফাজত করুন।
------------------------------------------------------------------


আজ আমার এক স্ট্যাটাসে সোমা, আমার কাছে জানতে চান, “মুনিম ভাই Moringo (শ্রীলঙ্কা নাম) গাছটা পাওয়া যায় কি এদেশে ?”

প্রশ্নটি পড়ার সাথে সাথে, মনে আফসোস হলো, হায়! এত বছর ধরে শ্রীলঙ্কান কলিগদের সাথে কাজ করে আসছি, কিন্তু তাদের কাছ থেকে তো এই মোরিনগো গাছের নামটি শুনতে পেলাম না?

সোমার প্রশ্নে বুঝতে পারছি, সোমা যখন এই গাছ নিয়ে উৎসাহী, নিশ্চয় এই গাছের আলাদা কোন বৈশিষ্ট্য আছে! সাথে সাথে গুগলসে সার্চে Moringo টাইপ করে সার্চ দিলাম!

ইয়া আল্লাহ! এ যে আমাদের সাজনা গাছ গো!!!!

ধীরে ধীরে নেটে, উইকিপিডিয়া সহ ইংরেজি আর আরবী ওয়েব সাইট গুলো যতো ঘাটাতে থাকি, এক এক করে অবাক করার মত কত শত তথ্য পেতে থাকি!!

অথচ আমাদের বাসায়, আমাদের বাড়িতে এই গাছ এমনি ভাবে পড়ে আছে, ঢাকার কাঁচা বাজারগুলোতে সজানার ডাটাকে সবজি হিসাবে বিক্রি হতে দেখতে পাচ্ছি, কিন্তু আমরা এই ডাটাগুলো খাইনা। তাই বাজার থেকে এইগুলো কিনে আনা হয়না, আর প্রতি বছর আমাদের গ্রামের বাড়ির গাছের মধ্যেই ডাটাগুলো শুকিয়ে যায়।

আমি ছোটবেলা দেখেছি আমাদের হিন্দু প্রতিবেশীরা, আমাদের বাসার এসে তারা নিজেদের হাতে গাছ থেকে সাজনার ডাটা পেড়ে নিয়ে যেতো । আমাদের বাসায় সাজনার ডাটা রান্না করে খাবার অভ্যাস না থাকলেও ঘি দিয়ে সাজনার কচি পাতা এবং শিং মাছের ঝোল রান্না করে, সদ্য প্রসূতি মাকে খাবার হিসাবে দেয়া হতো। কিন্তু আপনারা যে যা বলেন ভাই, সাজনা গাছের ছালের ভর্তা এখনো আমার খুব প্রিয় খাবারের একটি খাবার, গ্রামে গেলেই বলে দেই সাজনার ছালের ভর্তা আমার চাই।ছোটবেলা সাজনার ফুলের সাথে ডিম ভেজেও খেয়েছি।

সাজনার মধ্যে যে এত খনিজ উপাদান থাকে আর সজনা যে মানবদেহের জন্য এত উপকারী তা জানা ছিলোনা।

নেটে দেখতে পাই সাজনার বহুবিদ ব্যবহার, সাজনার পাতা দিয়ে জুস যেমন বানিয়ে পান করা যায়, তেমন করে শুকনা পাতা দিয়ে চাও বানিয়ে পান করা যায়। পাতাকে শুঁকিয়ে গুড়ো করেও ঔষুধ হিসাবে ব্যবহার করা যায়। উন্নত বিশ্বের সাজনার পাতার গুড়া সিয়ে ক্যাপসুল /টনিক বানিয়ে বাজারে বিক্রি হচ্ছে। এমন কী সাজনার বীজ থেকে বেল ওয়েল নামক উন্নমানের তেলও তৈরি করা হয়।

ইংরেজিতে সাজনার নাম 'ড্রামস্টিক' কিংবা Horse Radish Tree । বৈজ্ঞানিক নামঃ-Moring Oleifera Lam. আমাদের দেশে সবজি হিসাবে ব্যবহৃত হলেও, সারা বিশ্বে সাজনা একটি অতি প্রয়োজনীয় জীবনরক্ষাকারী উদ্ভিদ হিসাবে ব্যবহার করা হয়ে আসছে।

এ গাছ মানব শরীরে যেমন হরমোন বর্ধন করতে পারে, তেমনি পারে মায়েদের বুকের দুধ বাড়িয়ে দিতে, সাজনার পাতার রস খেলে শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি হয় ও আহারের রুচি বৃদ্ধি পায়। সাজনার মধ্যে আছে ভিটামিন এ, বি, সি, নিকোটিনিক এসিড, এমানো এসিড, প্রোটিন ও চর্বি, কার্বোহাইড্রেট, গ্লাইকোরোটিনিস ইত্যাদি উপাদান আছে।

এত উপকারি সাজনা পাতা দিয়ে ভারতীয়রা স্যুপ তৈরি করে পান করে থাকে। সাজনা আবার বসন্ত রোগও প্রতিরোধ করতে পারে। সর্দি কাশিতে, যকৃতের কার্যকারিতায়, কৃমি প্রতিরোধে ফলদায়ক। শরীরের ব্যথা নাশক, হজম শক্তি বর্ধক, রক্তের সংবহনতন্ত্রের ক্ষমতা বর্ধক, উচ্চ রক্তচাপ কমায়, রক্ত স্বল্পতা দূর করে, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে, হাপানি রোগ নিরামক করে, বাত রোগও উপশম করে।

দুঃখের বিষয় এমন একটি মহা উপকারী উদ্ভিদ আমাদের দেশে কোন গুরুত্ব পাচ্ছে না। এই বিষয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে সচেনতা বাড়াতে আজকের আমার এই নোট। যারা যারা আমার মত সাজনার এই বহুবিধ উপকারিতার তথ্য না জানেন, তারা আপনাদের মধ্যে তা জেনে উপকৃত হবেন।

Moringo টাইপ করে আপনারা গুগলসে সার্চ দিন তাহলে বিস্তারিত জানতে পারবেন।

পুনঃ অনেকেই ছালের ভর্তার রেসিপি জানতে চাচ্ছেন, তাই নিচে রেসিপি দিলাম।

সাজনার ছালের বাইরের শক্ত আবরণ তুলে নিয়ে, ভালোভাবে ধোয়ে নিয়ে,শিলপাটায় সাজনার ছাল, কিছু পেয়াজ রসুন, কাঁচা মরিচ দিয়ে বেটে মিহি করে নিতে হবে, পরিমাণ মত লবণ মিশিয়ে দিলেই সাজনা ছালের ভর্তা হয়ে যায়। সরিষার মত ঘ্রাণ করে।ছাল সিদ্ধ করতে হবেনা।

No comments:

Post a Comment