বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে বিখ্যাত কিছু কবিতা , তাঁর কিছু উক্তি , তাঁকে নিয়ে বিশ্ববরণ্যে ব্যক্তিদের কিছু উক্তি Some famous poems about Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman, Some of his quotes, some quotes from people in the world about him

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে বিখ্যাত কিছু কবিতা , তাঁর কিছু উক্তি , তাঁকে নিয়ে বিশ্ববরণ্যে ব্যক্তিদের কিছু উক্তি  Some famous poems about Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman, Some of his quotes, some quotes from people in the world about him

----------------------------
১। যদি রাত পোহালে শোনা যেত বঙ্গবন্ধু মরে নাই
তবে বিশ্ব পেত এক মহান নেতা
আমরা পেতে খুঁজে জাতির পিতা ।
.
গীতিকার ও সুরকার : হাসান মতিউর রহমান
শিল্পী : সাবিনা ইয়াসমিন

২। ‘শোনো একটি মুজিবরের থেকে/
লক্ষ্য মুজিবরের কণ্ঠস্বরের ধ্বনি, প্রতিধ্বনি/
আকাশে বাতাসে উঠে রণি।/
বাংলাদেশ আমার বাংলাদেশ।’
.
গীতিকার গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার সুরকার : অংশুমান রায়
৩।'যতকাল রবে পদ্মা-মেঘনা-গৌরী যমুনা বহমান
ততকাল রবে কীর্তি তোমার শেখ মুজিবুর রহমান'
দিকে দিকে আজ অশ্রুগঙ্গা - রক্তগঙ্গা বহমান
নাই নাই ভয় হবে হবে জয়- জয় মুজিবুর রহমান
-----অন্নদাশঙ্কর রায় । প্রথম কবি, যিনি বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কবিতা লিখেছেন।

৪।“নরহত্যা মহাপাপ, তার চেয়ে পাপ আরো বড়ো
করে যদি তাঁর পুত্রসম বিশ্বাসভাজন
জাতির জনক যিনি অতর্কিতে তাঁরেই নিধন।
নিধন সবংশে হলে সেই পাপ আরো গুরুতর।”
---------অন্নদাশঙ্কর রায়
‘দিকে দিকে আজ অশ্রম্নুগঙ্গা
রক্তগঙ্গা বহমান
নাই নাই ভয় হবে হবে জয়
জয় মুজিবুর রহমান।’
---------অন্নদাশঙ্কর রায়

অন্নদাশঙ্কর রায় প্রথম কবি, যিনি বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কবিতা লিখেছেন। আধুনিক বাংলা গানের গীতিকার গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে প্রথম গান রচনা করেন। -
==============
মহাদেব সাহা >>>>> (শেখ মুজিব আমার নতুন কবিতা)
.-------------------------------------------------------
“আমি আমার সমস্ত কবিত্ব শক্তি উজাড় করে
যে-কবিতা লিখেছি তার নাম শেখ মুজিব,
এই মুহূর্তে আর কোনো নতুন কবিতা লিখতে পারবো না আমি
কিন্তু এই যে প্রতিদিন বাংলার প্রকৃতিতে ফুটছে নতুন ফুল
শাপলা-পদ্ম-গোলাপ সেই গোলাপের বুক জুড়ে
ফুটে আছে মুজিবের মুখ
এদেশের প্রতিটি পাখির গানে মুজিবের প্রিয় নাম শুনি,
মনে হয় এরা সকলেই আমার চেয়ে আরো বড়ো কবি।
শেখ মুজিবের নামে প্রতিদিন লেখে তারা নতুন কবিতা”
.
.
-------------------------------------
কবি নির্মলেন্দু গুণ বঙ্গবন্ধুকে স্বভাব কবি বলেছেন। নির্মলেন্দু গুণ লিখেছেন ‘শেখ মুজিব : ১৯৭১’, আমি যেন কবিতায় শেখ মুজিবের কথা বলি । তাঁর ‘আমি আজ কারো রক্ত চাইতে আসিনি’
-------------------------------------------------------------------
শিরোনামের কবিতায় বঙ্গবন্ধুর প্রতি আবেগী হয়ে উচ্চারণ করেছেন,
.
“সমবেত সকলের মতো আমিও গোলাপ ফুল খুব ভালোবাসি,
রেসকোর্স পার হয়ে যেতে সেইসব গোলাপের একটি গোলাপ
গতকাল আমাকে বলেছে,
আমি যেন কবিতায় শেখ মুজিবের কথা বলি।
... ... ... ... ... ... ... ... ...
আমি আজ কারো রক্ত চাইতে আসিনি
আমি আমার ভালোবাসার কথা বলতে এসেছিলাম।”

।========================
বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কবি নির্মলেন্দু গুণ অসংখ্য কবিতা লিখেছেন। তিনি কবিতায় দেখিয়েছেন বঙ্গবন্ধু বাঙ্গালি জাতির পথ প্রদর্শক। জাতির মুক্তি নায়ক হিসেবে কবি শেখ মুজিবের কথা উচ্চারণ করেছেন
‘স্বাধীনতা শব্দটি কিভাবে আমাদের হল’ কবিতায়। -------
-------------------------------------------------------------
“শত বছরের শত সংগ্রাম শেষে ,
রবীন্দ্রনাথের মতো দৃপ্ত পায়ে হেঁটে
অত:পর কবি এসে জনতার মঞ্চে দাঁড়ালেন ৷
তখন পলকে দারুণ ঝলকে তরীতে উঠিল জল,
হৃদয়ে লাগিল দোলা ,
জনসমুদ্রে জাগিল জোয়ার সকল দুয়ার খোলা ৷
কে রোধে তাঁহার বজ্রকণ্ঠ বাণী ?
গণসূর্যের মঞ্চ কাঁপিয়ে কবি শোনালেন তাঁর অমর কবিতা খানি
এবারের সংগ্রাাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম,
এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।”
,==============================
.আমি কিংবদন্তির কথা বলছি |
আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ

আমি কিংবদন্তির কথা বলছি
আমি আমার পূর্বপুরুষের কথা বলছি।
তিনি স্বপ্নের মত সত্য ভাষণের কথা বলতেন
সুপ্রাচীন সংগীতের আশ্চর্য ব্যাপ্তির কথা বলতেন
তিনি কবি এবং কবিতার কথা বলতেন।
.------------------------------
জসীমউদ্দীন ১৯৭১ সালের অগ্নিগর্ভ সময়ে বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করেছেন এই প্রত্যয়দীপ্ত শব্দগুচ্ছে :
.
মুজিবুর রহমান
.
ওই নাম যেন বিসুভিয়াসের অগ্নি উগারী বান।
বঙ্গদেশের এ প্রান্ত হতে সকল প্রান্ত ছেয়ে
জ্বালায় জ্বলিছে মহা-কালানল ঝঞ্ঝা অশনি যেয়ে।
... ...
বাঙলা দেশের মুকুটবিহীন তুমি প্রসূর্ত রাজ,
প্রতি বাঙালির হৃদয়ে হৃদয়ে তোমার তক্ত তাজ।
(জসীমউদ্দীন/'বঙ্গবন্ধু')
======================
.
৯৭৫ সালের মধ্য আগস্টে ৩২ নম্বর বাড়ির যে সিঁড়িতে পড়েছিল বঙ্গবন্ধুর নিথর দেহ, সেই সিঁড়ি নিয়ে এক অসামান্য কবিতা লিখেছেন কবি রফিক আজাদ।
সেই সিঁড়ির রক্তধারাতেই যেন পবিত্র হয়েছে সমগ্র স্বদেশ, পবিত্র হয়েছে স্বদেশের মানচিত্র। রফিক আজাদের ভাষায় :
এই সিঁড়ি নেমে গেছে বঙ্গোপসাগরে,/
সিঁড়ি ভেঙ্গে রক্ত নেমে গেছে-/
বত্রিশ নম্বর থেকে/
সবুজ শস্যের মাঠ বেয়ে/
অমল রক্তের ধারা বয়ে গেছে বঙ্গোপসাগরে।.../
স্বদেশের মানচিত্রজুড়ে পড়ে আছে বিশাল শরীর।
======================
'বাঙালি, একটি ফিনিক্সপাখি' শিরোনামের কবিতায় কবি আখতারুজ্জামান আজাদ .
......------------------------------------------------------------------
“আমরা বাহান্নতে মরেছি দলে দলে,
আমরা একাত্তরে মরেছি ঝাঁকে ঝাঁকে,
আমরা পঁচাত্তরে মরেছি সপরিবারে।
... ... ... ... ... ... ... ...
পরাজিত শক্তি যখন হেঁটে বেড়ায় বিজয়ীর বেশে,
যখন ফুলেরা কাঁদে, হায়েনারা হাসে;
যখন মানুষ ঘুমায়, পশুরা জাগে;
তখন আমার ঠিকানায় আসে সেই পুরনো পত্র,
তখন আমার কানে ভাসে সেই পুরনো ছত্র
"এ বা রে র সংগ্রাম আমাদের মু ক্তি র সংগ্রাম!
এ বা রে র সংগ্রাম স্বা ধী ন তা র সংগ্রাম!
জ য় বাং লা!"।”
.
.
-------------------------------------------------------
কবি শামসুর রাহমান বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কবিতা লিখেছেন অসংখ্য। বঙ্গবন্ধুর মহা প্রয়াণেও যেন তিনি বেঁচে আছেন প্রকৃতির মাঝে এমনটিই তিনি বলেছেন
‘ তিনি এসেছেন ফিরে’ কবিতায়।
.----------------------
“লতাগুল্ম বাঁশঝাড়, বাবুই পাখির বাসা আর
মধুমতি নদীটির বুক থেকে বেদনা বিহবল
ধ্বনি উঠে মেঘমালা ছুঁয়ে
ব্যাপক ছড়িয়ে পড়ে সারা বাংলায়।
এখন তো তিনি নেই, তবু সেই ধ্বনি আজ শুধু
তাঁরই কথা বলে;”
.
ভীষণ অসুস্থ আমি, শ্বাসরোধকারী
আমার ব্যাধির কথা জানে নীলিমা, পাখির ঝাঁক, গাছগাছালি
আর জানে ক্ষয়িষ্ণু স্বপ্নসম্ভব
আমার ঘরের চার দেয়াল। অসুস্থতা নেকড়ের মতো
চিবিয়ে খাচ্ছে আমার মেদমজ্জা।
“অন্ধের দেশে কে দেবে অভয়?” অথবা, “কান পেতে থাকি দীপ্র কণ্ঠ শোনার আশায়,/ কাকের বাসায় ঈগলের গান কখনো যায় কি শোনা?”
------------------------
‘ধন্য সেই পুরম্নষ’-এর শেষ চারটি লাইন_
---------------------
ধন্য সেই পুরম্নষ, যাঁর নামের ওপর পতাকার মতো/
দুলতে থাকে স্বাধীনতা/
ধন্য সেই পুরম্নষ, যাঁর নামের ওপর ঝরে/
মুক্তিযোদ্ধাদের জয়ধ্বনি।’
-----------------------------------------------------------------------------
অ জ য় দা শ
বঙ্গবন্ধু : আদিগন্ত যে সূর্য

বাঙালি কি বাঙালি হয় শাড়ি, ধুতি, লুঙ্গিছাড়া?
থাকে না তার বর্গ কিছুই না থাকলে টুঙ্গিপাড়া।
সুর অসুরে হয় ইতিহাস, নেই কিছু এ দু’জীব ছাড়া
বাংলাদেশের ইতিহাসে দেবতা নেই মুজিব ছাড়া।
বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা বিখ্যাত তিনটি কবিতা অনেকের অনুরোধে পোস্ট করা হল।
#১
ধন্য সেই পুরুষ
শামসুর রাহমান
ধন্য সেই পুরুষ, নদীর সাঁতার পানি থেকে যে উঠে আসে
সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে;
ধন্য সেই পুরুষ, নীল পাহাড়ের চূড়া থেকে যে নেমে আসে
প্রজাপতিময় সবুজ গালিচার মতো উপত্যকায়;
ধন্য সেই পুরুষ, হৈমন্তিক বিল থেকে সে উঠে আসে
রঙ-বেরঙের পাখি ওড়াতে ওড়াতে।
ধন্য সেই পুরুষ, কাহাতের পর মই-দেয়া ক্ষেত থেকে যে ছুটে আসে
ফসলের স্বপ্ন দেখতে দেখতে।
ধন্য আমরা, দেখতে পাই দূর দিগন্ত থেকে এখনো তুমি আসো
আর তোমারই প্রতীক্ষায়
ব্যাকুল আমাদের প্রাণ, যেন গ্রীষ্মকাতর হরিণ
জলধারার জন্যে। তোমার বুক ফুঁড়ে অহঙ্কারের মতো
ফুটে আছে রক্তজবা, আর
আমরা সেই পুথের দিকে চেয়ে থাকি, আমাদের
চোখের পলক পড়তে চায় না,
অপরাধে নত হয়ে আসে আমাদের দুঃস্বপ্নময় মাথা।
দেখ, একে একে সকলেই যাচ্ছে বিপথে অধঃপাত
মোহিনী নর্তকীর মতো
জুড়ে দিয়েছে বিবেক-ভোলানো নাচ মনীষার মিনারে,
বিশ্বস্ততা চোরা গর্ত খুঁড়ছে সুহৃদের জন্যে
সত্য খান খান হয়ে যাচ্ছে যখন তখন
কুমোরের ভাঙা পাত্রের মতো,
চাটুকারদের ঠোঁটে অষ্টপ্রহর ছোটে কথার তুবড়ি,
দেখ, যে কোন ফলের গাছ
সময়ে-অসময়ে ভরে উঠেছে শুধু মাকাল ফলে।
ঝল্সে-যাওয়া ঘাসের মতো শুকিয়ে যাচ্ছে মমতা
দেখ, এখানে আজ
কাক আর কোকিলের মধ্যে কোন ভেদ নেই।
নানা ছল-ছুতোয়
স্বৈরাচারের মাথায় মুকুট পরাচ্ছে ফেরেবক্ষাজের দল।
দেখ, প্রত্যেকটি মানুষের মাথা
তোমার হাঁটুর চেয়ে এক তিল উঁচুতে উঠতে পারছে না কিছুতেই।
তোমাকে হারিয়ে
আমরা সন্ধ্যায় হারিয়ে যাওয়া ছায়ারই মতো
হয়ে যাচ্ছিলাম,
আমাদের দিনগুলি ঢেকে যাচ্ছিলো শোকের পোশাকে,
তোমার বিচ্ছেদের সঙ্কটের দিনে
আমরা নিজেদের ধক্ষংসস্তূপে ব’সে বিলাপে ক্রন্দনে আকাশকে ব্যথিত
করে তুলেছিলাম ক্রমাগত; তুমি সেই বিলাপকে
রূপান্তরিত করেছো জীবনের স্তুতিগানে, কেঁননা জেনেছি
জীবিতের চেয়েও অধিক জীবিত তুমি।
ধন্য সেই পুরুষ, যাঁর নামের ওপর রৌদ্র ঝরে
চিরকাল, গান হয়ে
নেমে আসে শ্রাবণের বৃষ্টিধারা; যাঁর নামের ওপর
কখনো ধুলো জমতে দেয় না হাওয়া,
ধন্য সেই পুরুষ, যাঁর নামের ওপর পাখা মেলে দেয়
জ্যোৎস্নার সারস,
ধন্য সেই পুরুষ, যাঁর নামের ওপর পতাকার মতো
দুলতে থাকে স্বাধীনতা,
ধন্য সেই পুরুষ, যাঁর নামের ওপর ঝরে মুক্তিযোদ্ধাদের জয়ধক্ষনি।
#২
এই সিঁড়ি
রফিক আজাদ
এই সিঁড়ি নেমে গেছে বঙ্গোপসাগরে,
সিঁড়ি ভেঙে রক্ত নেমে গেছে-
বত্রিশ নম্বর থেকে
সবুজ শস্যের মাঠ বেয়ে
অমল রক্তের ধারা ব’য়ে গেছে বঙ্গোপসাগরে।
মাঠময় শস্য তিনি ভালোবাসতেন,
আয়ত দু’চোখ ছিল পাখির পিয়াসী
পাখি তার খুব প্রিয় ছিলো-
গাছ-গাছালির দিকে প্রিয় তামাকের গন্ধ ভুলে
চোখ তুলে একটুখানি তাকিয়ে নিতেন,
পাখিদের শব্দে তার, খুব ভোরে, ঘুম ভেঙে যেতো।
স্বপ্ন তার বুক ভ’রে ছিল,
পিতার হৃদয় ছিল, স্নেহে-আর্দ্র চোখ-
এদেশের যা কিছু তা হোক না নগণ্য, ক্ষুদ্র
তার চোখে মূল্যবান ছিল-
নিজের জীবনই শুধু তার কাছে খুব তুচ্ছ ছিল:
স্বদেশের মানচিত্র জুড়ে প’ড়ে আছে
বিশাল শরীর…
তার রক্তে এই মাটি উর্বর হয়েছে,
সবচেয়ে রূপবান দীর্ঘাঙ্গ পুরুষ:
তার ছায়া দীর্ঘ হতে-হ’তে
মানিচিত্র ঢেকে দ্যায় সস্নেহে, আদরে!
তার রক্তে প্রিয় মাটি উর্বর হয়েছে-
তার রক্তে সবকিছু সবুজ হয়েছে।
এই সিঁড়ি নেমে গেছে বঙ্গোপসাগরে,
সিঁড়ি ভেঙে রক্ত নেমে গেছে-
স্বপ্নের স্বদেশ ব্যেপে
সবুজ শস্যের মাঠ বেয়ে
অমল রক্তের ধারা ব’য়ে গেছে বঙ্গোপসাগরে।
#৩
বঙ্গবন্ধু স্বরণে
অন্নদাশঙ্কর রায়
অন্নদাশঙ্কর রায়
নরহত্যা মহাপাপ, তার চেয়ে পাপ আরো বড়ো
করে যদি যারা তাঁর পুত্রসম বিশ্বাসভাজন
জাতির জনক যিনি অতর্কিত তাঁরেই নিধন।
নিধন সবংশে হলে সেই পাপ আরো গুরুতর,
সারাদেশ ভাগী হয় পিতৃঘাতী সে ঘোর পাপের
যদি দেয় সাধুবাদ, যদি করে অপরাধ ক্ষমা।
কর্মফল দিনে দিনে বর্ষে বর্ষে হয় এর জমা
একদা বর্ষণ বজ্ররূপে সে অভিশাপের।
রক্ত ডেকে আনে রক্ত, হানাহানি হয়ে যায় রীত।
পাশবিক শক্তি দিয়ে রোধ করা মিথ্যা মরীচিকা।
পাপ দিয়ে শুরু যার নিজেই সে নিত্য বিভীষিকা।
ছিন্নমস্তা দেবী যেন পান করে আপন শোণিত।
বাংলাদেশ! বাংলাদেশ! থেকে নাকো নীরব দর্শক
ধিক্কারে মুখর হও। হাত ধুয়ে এড়াও নরক।
--------------------------------------------------------------------------
-------------------------
==========================
=====================
/
এবার দেখে আসি মহান এই বাঙ্গালীকে নিয়ে বিশ্বের বিখ্যাত কিছু মানুষের বিখ্যাত উক্তি গুলো দেখে আসি :
-===============================================
১. আমরা যখন মরতে শিখেছি, তখন কেউ আমাদের দাবায়ে রাখতে পারবে না।
,
২. এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম!
,
৩. মানুষকে ভালোবাসলে মানুষও ভালোবাসে। যদি সামান্য ত্যাগ স্বীকার করেন, তবে জনসাধারণ আপনার জন্য জীবন দিতেও পারে।
.
৪. আমার সবচেয়ে বড় শক্তি আমার দেশের মানুষকে ভালবাসি, সবচেয়ে বড় দূর্বলতা আমি তাদেরকে খুব বেশী ভালবাসি।
.
৫. প্রধানমন্ত্রী হবার কোন ইচ্ছা আমার নেই। প্রধানমন্ত্রী আসে এবং যায়। কিন্তু, যে ভালোবাসা ও সম্মান দেশবাসী আমাকে দিয়েছেন, তা আমি সারাজীবন মনে রাখবো।
.
৬. সাত কোটি বাঙ্গালির ভালোবাসার কাঙ্গাল আমি। আমি সব হারাতে পারি, কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসা হারাতে পারব না।
.
৭. বিশ্ব দুই শিবিরে বিভক্ত - শোষক আর শোষিত। আমি শোষিতের পক্ষে।
.
৮. এই স্বাধীন দেশে মানুষ যখন পেট ভরে খেতে পাবে, পাবে মর্যাদাপূর্ণ জীবন; তখনই শুধু এই লাখো শহীদের আত্মা তৃপ্তি পাবে।
.
০৯. দেশ থেকে সর্বপ্রকার অন্যায়, অবিচার ও শোষণ উচ্ছেদ করার জন্য দরকার হলে আমি আমার জীবন উৎসর্গ করব।
.
১০. আমি যদি বাংলার মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে না পারি, আমি যদি দেখি বাংলার
মানুষ দুঃখী, আর যদি দেখি বাংলার মানুষ পেট ভরে খায় নাই, তাহলে আমি শান্তিতে মরতে পারব না।
.
১১. এ স্বাধীনতা আমার ব্যর্থ হয়ে যাবে যদি আমার বাংলার মানুষ পেট ভরে ভাত না খায়। এই স্বাধীনতা আমার পূর্ণ হবে না যদি বাংলার মা-বোনেরা কাপড় না পায়। এ স্বাধীনতা আমার পূর্ণ হবে না যদি এদেশের মানুষ যারা আমার যুবক শ্রেণী আছে তারা চাকরি না পায় বা কাজ না পায়।
.
১২. আমাদের চাষীরা হল সবচেয়ে দুঃখী ও নির্যাতিত শ্রেণী এবং তাদের অবস্থার উন্নতির জন্যে আমাদের উদ্যোগের বিরাট অংশ অবশ্যই তাদের পেছনে নিয়োজিত করতে হবে।
.
১৩. যিনি যেখানে রয়েছেন, তিনি সেখানে আপন কর্তব্য পালন করলে দেশের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে না।
.
১৪. সরকারী কর্মচারীদের জনগণের সাথে মিশে যেতে হবে। তারা জনগণের খাদেম, সেবক, ভাই। তারা জনগণের বাপ, জনগণের ছেলে, জনগণের সন্তান। তাদের এই মনোভাব নিয়ে কাজ
করতে হবে।
.
১৫. সমস্ত সরকারী কর্মচারীকেই আমি অনুরোধ করি, যাদের অর্থে আমাদের সংসার চলে তাদের সেবা করুন।
.
১৬. গরীবের উপর অত্যাচার করলে আল্লাহর কাছে তার জবাব দিতে হবে।
.
১৭. জীবন অত্যন্ত ক্ষণস্থায়ী। এই কথা মনে রাখতে হবে। আমি বা আপনারা সবাই মৃত্যুর পর সামান্য কয়েক গজ কাপড় ছাড়া সাথে আর কিছুই নিয়ে যাব না। তবে কেন আপনারা মানুষকে শোষণ করবেন, মানুষের উপর অত্যাচার করবেন?
.
১৮. দেশের সাধারণ মানুষ, যারা আজও দুঃখী, যারা আজও নিরন্তর সংগ্রাম করে বেঁচে আছে, তাদের হাসি-কান্না, সুখ-দুঃখকে শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির উপজীব্য করার জন্য শিল্পী, সাহিত্যিক ও সংস্কৃতিসেবীদের প্রতি আহবান জানাচ্ছি।
.
১৯. সাংস্কৃতিক স্বাধীনতা ছাড়া রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বাধীনতা অর্থহীন। তাই মাটি ও মানুষকে কেন্দ্র করে গণমানুষের সুখ, শান্তি ও স্বপ্ন এবং আশা-আকাঙ্খাকে অবলম্বন করে গড়ে উঠবে বাংলার নিজস্ব সাহিত্য-সংস্কৃতি।
.
২০. বাঙ্গালি জাতীয়তাবাদ না থাকলে আমাদের স্বাধীনতার অস্তিত্ব বিপন্ন হবে।
.
২১. গণআন্দোলন ছাড়া, গণবিপ্লব ছাড়া বিপ্লব হয় না।
.
২২. জনগণকে ছাড়া, জনগণকে সংঘবদ্ধ না করে, জনগণকে আন্দোলনমুখী না করে এবং পরিস্কার আদর্শ সামনে না রেখে কোন রকম গণআন্দোলন হতে পারে না।
.
২৩. আন্দোলন মুখ দিয়ে বললেই করা যায় না। আন্দোলনের জন্য জনমত সৃষ্টি করতে হয়। আন্দোলনের জন্য আদর্শ থাকতে হয়। আন্দোলনের জন্য নিঃস্বার্থ কর্মী হতে হয়। ত্যাগী মানুষ থাকা দরকার। আর সর্বোপরি জনগণের সংঘবদ্ধ ও ঐক্যবদ্ধ সমর্থন থাকা দরকার।
.
২৪. অযোগ্য নেতৃত্ব, নীতিহীন নেতা ও কাপুরুষ রাজনীতিবিদদের সাথে কোন দিন একসাথে হয়ে দেশের কাজে নামতে নেই। তাতে দেশসেবার চেয়ে দেশের ও জনগণের সর্বনাশই বেশি হয়।
.
২৫. রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের চারটি জিনিসের প্রয়োজন, তা হচ্ছে: নেতৃত্ব, ম্যানিফেস্টো বা আদর্শ, নিঃস্বার্থ কর্মী এবং সংগঠন।
.
২৬. ভিক্ষুক জাতির ইজ্জত থাকে না। বিদেশ থেকে ভিক্ষা করে এনে দেশকে গড়া যাবে না। দেশের মধ্যেই পয়সা করতে হবে।
.
২৭. বাংলার উর্বর মাটিতে যেমন সোনা ফলে, ঠিক তেমনি পরগাছাও জন্মায়! একইভাবে,
বাংলাদেশে কতকগুলো রাজনৈতিক পরগাছা রয়েছে, যারা বাংলার মানুষের বর্তমান দুঃখ-দূর্দশার জন্য দায়ী।
.
২৮. যদি আমরা বিভক্ত হয়ে যাই এবং স্বার্থের দ্বন্দ ও মতাদর্শের অনৈক্যের দ্বারা প্রভাবান্বিত
হয়ে আত্বঘাতী সংঘাতে মেতে উঠি, তাহলে যারা এদেশের মানুষের ভালো চান না ও এখানাকার সম্পদের ওপর ভাগ বসাতে চান তাদেরই সুবিধা হবে এবং বাংলাদেশের
নির্যাতিত, নিপীড়িত, ভাগ্যাহত ও দুঃখী মানুষের মুক্তির দিনটি পিছিয়ে যাবে।
.
২৯. আর সাম্প্রদায়িকতা যেন মাথাচারা দিয়ে উঠতে না পারে। ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র বাংলাদেশ। মুসলমান তার ধর্মকর্ম করবে। হিন্দু তার ধর্মকর্ম করবে। বৌদ্ধ তার ধর্মকর্ম করবে। কেউ কাউকে বাধা দিতে পারবে না।
.
৩০. পবিত্র ধর্মকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা চলবে না।
.
৩১. ভুলে যেয়ো না। স্বাধীনতা পেয়েছো এক রকম শত্রুর সাথে লড়াই করে। তখন আমরা জানতাম আমাদের এক নম্বর শত্রু পাকিস্থানের সামরিক বাহিনী ও শোষকগোষ্ঠী। কিন্তু, এখন
শত্রুকে চেনাই কষ্টকর।
.
৩২. শহীদদের রক্ত যেন বৃথা না যায়।
.
৩৩. বাংলাদেশ এসেছে বাংলাদেশ থাকবে।
.
৩৪. বাংলার মাটি দু্র্জয় ঘাঁটি জেনে নিক দুর্বৃত্তেরা।
.
৩৫. বাংলার মাটিতে যুদ্ধাপরাধীর বিচার হবেই।
.
৭মার্চের ভাষণকে গেটিস বার্গ এ্যাড্রেসের(আব্রাহাম লিংকন ) ও I have a dream(মার্টিন লুথার কিং) এর সাথে তুলনা করা হয় ।
==============================
==================================
/
এবার তাকে নিয়ে বিখ্যাত ব্যক্তিদের কিছু উক্তি :
=============================
১.বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারী টাইম ম্যাগাজিন ১৯৮২ সালের ৫ এপ্রিল তাদের একটি সংখ্যায় বলেছিল,"স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম দশ বছরের মধ্যে শেখ মুজিবুর রহমানের আমল ছিল সর্বপ্রথম এবং দীর্ঘ গণতান্ত্রিক আমল।১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট স্বাধীনতা সংগ্রামের নায়ক ও প্রথম নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবকে হত্যার পর হঠাত গনতান্ত্রিক শাসনের অবসান ঘটে।"
.
২.শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করার পর বিবিসির সংবাদদাতা ব্রায়ান বারণ বিভিন্ন দেশের সাংবাদিকদের সাথে ঢাকায় এসেছিলেন।তাকে ততকালীন সরকার তিনদিন হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আটক রাখার পর বাংলাদেশ ত্যাগে বাধ্য করে।আগস্ট মাসের শেষের দিকে তিনি তার সংবাদ বিবরনীতে উল্লেখ করেন,"শেখ মুজিব সরকারীভাবে বাংলাদেশের ইতিহাস এবং জনগনের হৃদয়ে উচ্চতম আসনে পূর্নপ্রতিষ্ঠিত হবেন।এটা শুধু সময়ের ব্যাপার।এটা যখন ঘটবে তখন নিঃসন্দেহে তার বুলেটবিক্ষত বাসগৃহ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন স্মারকচিহ্ন এবং কবরস্থান পূন্যতীর্থে পরিনত হবে।"
.
৩."ফিনান্সিয়াল টাইমস বলেছে, 'মুজিব না থাকলে বাংলাদেশ কখনই জন্ম নিতনা।' --দি লিসনার-লন্ডন-২৮ আগস্ট ১৯৭৫
৪.নিউজ উইকে বঙ্গবন্ধুকে আখ্যা দেওয়া হয়, "পয়েট অফ পলিটিক্স বলে।"
৫.শেখ মুজিব নিহত হবার খবরে আমি মর্মাহত।তিনি একজন মহান নেতা ছিলেন।তার অনন্যসাধারন সাহসিকতা এশিয়া ও আফ্রিকার জনগনের জন্য প্রেরণাদায়ক ছিল। --–ইন্দিরা গান্ধী
ভারতীয় বেতার 'আকাশ বানী' ১৯৭৫ সালের ১৬ আগস্ট তাদের সংবাদ পর্যালোচনা অনুষ্ঠানে বলে, "যিশুমারা গেছেন। এখন লক্ষ লক্ষ লোক ক্রস ধারণ করে তাকে স্মরণ করছে। মূলত একদিন মুজিবই হবেন যিশুর মতো।
৬. মুজিব হত্যার পর বাঙালীদের আর বিশ্বাস করা যায় না,যারা মুজিবকে হত্যা করেছে তারা যেকোন জঘন্য কাজ করতে পারে
---নোবেল বিজয়ী উইলিবান্ট।
৭. শেখ মুজিবের মৃত্যুতে বিশ্বের শোষিত মানুষ হারাল তাদের একজন মহান নেতাকে,আমি হারালাম একজন অকৃত্রিম বিশাল হৃদয়ের বন্ধুকে
—ফিদেল কাস্ট্রো।
৮. আপোষহীন সংগ্রামী নেতৃত্ব আর কুসুম কোমল হৃদয় ছিল মুজিব চরিত্রের বৈশিষ্ঠ্য
—ইয়াসির আরাফাত।
৯. শেখ মুজিব নিহত হবার খবরে আমি মর্মাহত। তিনি একজন মহান নেতা ছিলেন।তার অনন্যসাধারন সাহসিকতা এশিয়া ও আফ্রিকার জনগনের জন্য প্রেরণাদায়ক ছিল।
–ইন্দিরা গান্ধী।
১০. বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হচ্ছেন সমাজতন্ত্র প্রতীষ্ঠার সংগ্রামের প্রথম শহীদ।তাই তিনি অমর।
–সাদ্দাম হোসেন।
১১. শেখ মুজিবুর রহমান ভিয়েতনামী জনগনকে অনুপ্রাণিত করেছিলেন
— কেনেথা কাউণ্ডা।
১২. "শেখ মুজিব দৈহিকভাবেই মহাকায় ছিলেন, সাধারণ বাঙালির থেকে অনেক উচুঁতে ছিলো তার মাথাটি, সহজেই চোখে পড়তো তার উচ্চতা। একাত্তরে বাংলাদেশকে তিনিই
আলোড়িত-বিস্ফোরিত করে চলেছিলেন, আর তার পাশে ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর হয়ে যাচ্ছিল তার সমকালীন এবং প্রাক্তন সকল বঙ্গীয় রাজনীতিবিদ।
.
জনগণকে ভুল পথেও নিয়ে যাওয়া যায়; হিটলার মুসোলিনির মতো একনায়কেরাও জনগণকে দাবানলে, প্লাবনে, অগ্নিগিরিতে পরিণত করেছিলো, যার পরিণতি হয়েছিলো ভয়াবহ। তারা জনগণকে উন্মাদ আর মগজহীন প্রাণীতে পরিণত করেছিলো। একাত্তরের মার্চে শেখ মুজিব
সৃষ্টি করেছিলো শুভ দাবানল, শুভ প্লাবন, শুভ আগ্নেয়গিরি, নতুনভাবে সৃষ্টি করেছিলেন বাঙালি মুসলমানকে, যার ফলে আমরা স্বাধীন হয়েছিলাম।"
--হুমায়ুন আজাদ
১৩. বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ডে বাঙলাদেশই শুধু এতিম হয় নি বিশ্ববাসী হারিয়েছে একজন মহান সন্তানকে।
– জেমসলামন্ড,ইংলিশ এম পি।
১৪.শেখ মুজিবকে চতুর্দশ লুই য়ের সাথে তুলনা করা যায়। জনগন তার কাছে এত প্রিয় ছিল যে লুই ইয়ের মত তিনি এ দাবী করতে পারেন আমি ই রাষ্ট্র।
--- পশ্চিম জার্মানী পত্রিকা।
১৫.আওয়ামিলীগ নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের মত তেজী এবং গতিশীল নেতা আগামী বিশ বুছরের মধ্যে এশিয়া মহাদেশে আর পাওয়া যাবে না
---- হেনরি কিসিঞ্জার।
১৬.শেখ মুজিব নিহত হলেন তার নিজেরই সেনাবাহিনীর হাতে অথচ তাকে হত্যা করতে পাকিস্তানীরা সংকোচবোধ করেছে।
বিবিসি-১৫ আগস্ট ১৯৭৫।
======================
ইন্টারনেট , ব্লগ ও অনলাইন পত্রিকা অবলম্বনে।
============================

No comments:

Post a Comment