BCS Written Exam Preparatory Advice - বিসিএস লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতিমূলক পরামর্শ

BCS Written Exam Preparatory Advice - বিসিএস লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতিমূলক পরামর্শ




© রবিউল আলম লুইপা

==================

প্রতি লিখিত পরীক্ষায় আনুমানিক ২০ হাজারেরও মতো প্রার্থী অংশগ্রহণ করেন। কাঙ্ক্ষিত ক্যাডার পেতে হলে লিখিত পরীক্ষায় বেশি নম্বর তোলার চেষ্টা করতে হবে। নিয়ম মেনে ঠিকঠাক এগোলেই লিখিত পরীক্ষায় ভালো করা কঠিন কিছু নয়। 

বিসিএস লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতির শুরুতেই যে বিষয়গুলো লক্ষ রাখতে হবে—

১. প্রথমেই বিসিএস লিখিত পরীক্ষার সিলেবাস থেকে ছয়টি বিষয়ের নম্বর বণ্টন ও বিষয়ভিত্তিক টপিকগুলো চোখ বুলিয়ে নিন। সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) ওয়েবসাইট (www.bpsc.gov.bd) থেকে লিখিত পরীক্ষার সিলেবাস (৩৫তম বিসিএসের সিলেবাসই এখন পর্যন্ত চলছে, এরপর আর নতুন সিলেবাস হালনাগাদ হয়নি) ডাউনলোড করতে পারবেন।

২. এক বা দুই সেট যেকোনো প্রকাশনীর গাইড বই দেখে সিলেবাসের বিষয়ভিত্তিক টপিকগুলো ক্লিয়ার করে নিতে পারেন। শিক্ষাজীবনের বিভিন্ন স্তরের পাঠ্যবই ও রেফারেন্স বইগুলো মিলিয়ে গাইড বই লিখা হয়। তিন-চার মাসে বা অল্প সময়ে লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে এটি সহায়ক হবে।

মৌলিক প্রস্তুতির জন্য যে বইগুলো সহায়ক হবে—

♦ বাংলা, বাংলাদেশ, আন্তর্জাতিক—এই তিন বিষয়ের জন্য অ্যাসিওরেন্স বা প্রফেসরস প্রকাশনীর বই।

♦ ইংরেজির জন্য অ্যাসিওরেন্স বা মিলারস পাবলিকেশন্সের বই।

♦ গণিত ও বিজ্ঞানের জন্য ওরাকল প্রকাশনীর বই।

♦ আরিফ খানের সংবিধানের ব্যাখ্যামূলক বই, মো. আব্দুল হালিমের সংবিধানসংক্রান্ত বই এবং মুক্তিযুদ্ধের জন্য ‘মুক্তিযুদ্ধের ইতিবৃত্ত’ বইটি নিতে পারেন।

♦ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমীক্ষা (চলতি বছর), দৈনিক সংবাদপত্র ও অন্যান্য বিষয়-সংশ্লিষ্ট রেফারেন্স বই থেকে যত বেশি তথ্য-উপাত্ত নিতে পারবেন, আপনার লেখা ততই সমৃদ্ধ হবে।

৩. প্রতিটি বিষয়ের গাইড বই পড়া শেষ হলে অন্যান্য টেক্সট বা রেফারেন্স বইয়ে মন দিন।

এরপর নিজের লেখার মানকে উন্নত করতে টপিক-সংশ্লিষ্ট গ্রাফ, চার্ট, উক্তি, রেফারেন্স যাতে যুক্ত করা যায়, সেভাবে প্রস্তুতি নিন।

৪. সিলেবাসের বড় পরিসর দেখে হাল ছেড়ে দেবেন না। পুরো সিলেবাস ৫০-৬০ দিনে ভাগ করে একদিক থেকে পড়া শুরু করুন। বিগত চারটি বিসিএস পরীক্ষা বিশ্লেষণে দেখা যায়, প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফলাফলের পর লিখিত পরীক্ষার জন্য কমপক্ষে তিন মাস সময় পাওয়া যায়। প্রতিদিন সে অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে পড়তে থাকুন।

৫. প্রিলির মতো লিখিত পরীক্ষার বেলায়ও বিভিন্ন প্রকাশনীর ডাইজেস্ট বের হয়। লিখিত প্রস্তুতির শেষের দিকে ডাইজেস্টের প্রশ্নগুলোর ওপর চোখ বুলিয়ে নিতে পারেন, বিশেষ করে যেসব ঘটনা সম্প্রতি ঘটে গেছে। তবে ডাইজেস্টকে বাড়তি গুরুত্ব দিতে গিয়ে যেন গুরুত্বপূর্ণ অন্য বিষয়গুলো ছুটে না যায়!

৬. ইংরেজি, গাণিতিক যুক্তি এবং সাধারণ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ওপর জোর দিলে তুলনামূলক বেশি নম্বর পেয়ে অন্যদের চেয়ে এগিয়ে থাকা সম্ভব হবে। অন্য বিষয়গুলোতে প্রায় সবার নম্বর মোটামুটি কাছাকাছি থাকে। লিখিত পরীক্ষার উত্তরপত্রে বাংলা ভার্সনের পরিবর্তে ইংরেজি ভার্সনের ব্যবহার আপনার দক্ষতা ফুটিয়ে তুলবে এবং ভালো নম্বর পেতে সহায়ক হবে।

৭. ইংরেজির প্রস্তুতিতে নিয়মিত ফ্রি-হ্যান্ড রাইটিং অনুশীলন করবেন। এর পর একজন ইংরেজি এক্সপার্টকে দিয়ে যাচাই করিয়ে নিতে পারলে ভালো হয়। দৈনিক সংবাদপত্রের সম্পাদকীয় অংশের পাশাপাশি অনলাইন নিউজ পোর্টালের বাংলা ও ইংরেজি খবর দেখে অনুবাদ চর্চা করতে পারেন।

৮. উত্তরপত্রে আপনার লেখা হতে হবে তথ্যবহুল। যেমন—একটি বিষয়ের গুরুত্ব আলোচনা করার সময় স্কুল-কলেজ লেভেলের মতো গতানুগতিকভাবে না লিখে অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, আন্তর্জাতিক গুরুত্বগুলো গবেষণাধর্মী তথ্য, উপাত্ত ও উদ্ধৃতির মাধ্যমে ব্যাখ্যা করতে হবে।

৯. লিখিত পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়নে আপনার জ্ঞানের চেয়ে সৃজনশীলতার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হবে। তাই যত বই বা সূত্র থেকে যত বিশেষভাবে তথ্য উপস্থাপন করতে পারবেন, প্রতিযোগিতায় আপনি ততই এগিয়ে থাকবেন।

১০. প্রেজেন্টেশনের জন্য কালো কালির পাশাপাশি কোটেশন লিখতে নীল কালি ব্যবহার করতে পারেন; স্কেলিং, গ্রাফ, চার্ট অবশ্যই পেনসিল দিয়ে করবেন। হাতের লেখা সুন্দর হলে ভালো, না হলে উত্তরপত্র পরিপাটি রাখার চেষ্টা করবেন।

১১. লিখিত পরীক্ষায় ‘সময় বণ্টন’ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ২০০ নম্বরের পরীক্ষায় প্রতি নম্বরের জন্য ১.২০ মিনিট এবং ১০০ নম্বরের পরীক্ষায় প্রতি নম্বরের জন্য ১.৮০ মিনিট করে সময় পাবেন। এভাবেই প্রতিটি প্রশ্নের নম্বরের দিকে লক্ষ রেখে তার জন্য সময় বরাদ্দ করবেন।

১২. বাসায় বসে কিংবা কোনো কোচিংয়ে নিয়মিত মডেল টেস্ট দিয়ে হাতের লেখার গতি বাড়ান। আপনি কতটুকু পড়লেন বা জানলেন তার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে—আপনি কতটুকু লিখতে পারলেন। লিখিত পরীক্ষায় পাঁচ দিনে ২১ ঘণ্টা লিখতে হয়। বুঝতেই পারছেন, ফাস্ট হ্যান্ড রাইটিং এবং শারীরিক সক্ষমতা কতটা দরকার!

(৪০ বিসিএসের জন্য লেখা, ৪১ তম লিখিত পরীক্ষাতেও সম গুরুত্বপূর্ণ, কালের কন্ঠ ২৮ আগষ্ট, ২০১৯ থেকে নেয়া )

লিংকঃ https://www.kalerkantho.com/.../chakriache/2019/08/28/807895

No comments:

Post a Comment