৪১তম বিসিএস লিখিত প্রস্তুতি নির্দশনা
৪১ এ কাট মার্ক যাই হোক লিখিত প্রস্তুতি নিন।
বাংলাঃ
পার্ট-১
গ্রামার- ৯-১০ম শ্রেনীর গ্রামার বইটা ভালো ভাবে পড়ুন। এই পার্ট বিগত প্রশ্ন ও গাইড বই থেকেই ভালো মার্ক পাওয়া সম্ভব।
ভাবসম্প্রসারণ ও সারমর্ম - পরীক্ষার আগে আগে কিছু প্রাকটিস করুন।
বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের উপর প্রশ্নত্তর –লাল নীল দীপাবলি, সৌমিত্র শেখর এর বই থেকে বিভিন্ন ধরনের গ্রন্থের ছোট পরিসরে বিষয় বস্তু পড়ে ফেলুন। শীকর নামক একটা নীল রংয়ের গ্রন্থ সমালোচনার বই আছে, লেখক মনে নেই। এটা খুবই কার্যকরি হবে আশা করা যায়।
পার্ট-২
১। অনুবাদ (ইংরেজি থেকে বাংলা) (১৫)- প্রতিদিন অনুশীলনের কোন বিলল্প নেই।
২। কাল্পনিক সংলাপ (১৫)- নিজে থেকে লেখা যাবে।
৩। পত্রলিখন (১৫)- সম্পাদক বরাবর লেখার জন্য একটা কমন ফরমেট তৈরী করে নিন
৪। গ্রন্থ সমালোচনা (১৫)-একটা গ্রামীণ জীবন কেন্দ্রিক (হাজার বছর ধরে), একটা নদী বা জেলে জীবন (পদ্মা নদীর মাঝি), ভাষা আন্দোলন কেন্দ্রিক (আরেক ফাল্গুন), মহান স্বাধীনতা কেন্দ্রিক, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ৩ টা বই সম্পর্কে, একটা রবীন্দ্র নাথের, কাজী নজরুল ইসলামের তথা এই রিলেটেড কিছু সহজ ও নিজের সুবিধামত বইয়ের বিষয়বস্তু ঠিক করে নিন।
৫। রচনা(৪০)- বাংলাদেশ বিষয়াবলী দিয়ে কভার হয়ে যাবে।
ইংরেজিঃ
যাদের ইংরেজি ভালো তাদের কিছুই পড়ার নেই শুধু একটু প্যাটার্ণ দেখিলেই হয়ে যায়, আর যাদের অবস্থা আমার মতো তাদের প্রতিনিয়ত প্রাকটিস করতে হবে। ইচ্ছার বিপরীদে হলেও প্রাকটিস করতে হবে।
রেগুলার ১ টা বাংলা থেকে ইংরেজি আর একটা ইংরেজি থেকে বাংলা ট্রান্সেলেশন করুন।-২৫+২৫+১৫=৬৫ মার্কস
Letter to Editorial এর জন্য একটা কমন ফরমেট লিখে ফেলুন।
শব্দ দিয়ে বাক্য রচনা- শব্দের অর্থ জানা না থাকলে সেটিকে প্যাসেজে মার্ক করুন, কি ধরনের অর্থ হয়ে পারে নিজে রিয়ালাইজ করে বাক্য রচনা করে ফেলুন। ফ্রি হ্যান্ড রাইটিং প্র্যাকটিস করুণ।
রচনা(৫০)- বাংলাদেশ বিষয়াবলী দিয়ে কভার হয়ে যাবে।
গনিতঃ
ম্যাথের বেসিক খুব দূর্বল হলে ৯-১০ এর বই সিলেবাসের সাথে সমঞ্জস্য রেখে প্র্যাকটিস শুরু করে দিন। কিছু হায়ার-ম্যাথ আসে ইদানিং। নিজের সর্বোচ্চ পরিমান প্রস্তুতি নিন। খুব কঠিন আসলে খুব সামান্য সংখ্যক পরীক্ষার্থী ছাড়া অনেকেই পারবে না, এটা বিশ্বাস রাখুন।
নিয়মিত মানসিক দক্ষতা অধ্যায় ধরে ধরে আগান।
বিজ্ঞান-
ভৌত বিজ্ঞান থেকে প্রশ্ন বেশি আসে, তাছাড়াও সিলেবাস ধরে ধরে ৯ম-১০ম শ্রেণির পদার্থ বিজ্ঞান বই পড়বেন। যেমন- আলো, শব্দ, চৌম্বুকত্ব ইত্যাদি। পাশা-পাশি গাইড বই।
কম্পিঊটার ও তথ্য প্রযুক্তি-
১। একাদশ শ্রেণীর তথ্য প্রযুক্তি বোর্ড বই- মুজিবুর রহমান+ যে কোন লিখিত গাইড বই।
বিজ্ঞান বিষয়ে সম্পূর্ণ উত্তর দেওয়াটাই মূখ্য চ্যালেঞ্জ। ছোট ছোট অসংখ্য প্রশ্ন।
আন্তর্জাতিক-
শর্ট প্রশ্ন-
অনেক গুলা টপিক আছে সিলেবাস এ, যতটুকু সম্ভব সব বিষয় সম্পর্কে পরিষ্কার ধারনা রাখতে হবে, যেন কিছু লেখা যায়। এবং সম্ভব হলে তাদের ২-১ টা সংজ্ঞা মনে রাখতে হবে। ইদানিং সিলেবাস বহির্ভুত শর্ট প্রশ্ন আসে। যাই আসুক লিখে আসতেই হবে।
অ্যানালাইটিকাল প্রশ্ন- ৬০ মার্ক
এখানে কিছু সাম্প্রতিক বৈশ্বিক বিষয়ে আপনার ডিপ নলেজ দরকার। যেমন- সার্ক, জাতিসংঘ সহ অন্যান্য ঊল্লেখ্যযোগ্য সংস্থার বিবরণ সাথে বাংলাদেশ এর ভূমিকা, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক, বাংলাদেশ-মিয়ানমার ইস্যু, চীন- আমেরিকা-ভারত, সিরিয়া ইস্যু, ফিলিস্তান-ইসরাইল সম্পর্ক, মিডিল ইস্ট নিয়ে বিস্তর আলোচলা, ২ কোরিয়ার সম্পর্ক তাতে বাংলাদেশের প্রভাব, ১ম-২য় বিশ্বযুদ্ধ, এইসকল বিষয়ে ইউটিউবএ অনেক ভালো ভালো ভিডিও আছে। নোট করে করে পড়তে পারেন।
আন্তর্জাতিক বিয়য়ে ভালো করার জন্য ম্যাপের কোন বিকল্প নেই। ধিরে ধিরে ম্যাপ প্র্যাকটিস করবেন, যাতে ২ মিনিটের বেশি সময় নষ্ট না হয়।
বাংলাদেশঃ
সংবিধানের অধিকাংশ ধারাই জানা লাগবে, সম্ভব হলে সব ধারা, তফসিল সাথে সংশোধনী।
বাংলাদেশের ম্যাপ। সম্ভব হলেই ম্যাপ দিবেন।যেমন- মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে প্রশ্নে আপনি একটি ম্যাপ দিন, সেক্টর গুলা মেনসন করুন।
কোটেশন- টপিক ধরে ধরে কোটেশন নেটে সার্স দিয়ে প্র্যাকটিস করুন। লিখে রাখুন।
সকল প্রশ্নে সম্ভব হলেই ডাটা মাস্ট, সাথে ডাটার সোর্স দিবেন। অর্থনৈতিক সমীক্ষা সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের ওয়েব সাইটে অনেক ডাটা থাকে বিশেষ করে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সাইডে।
যেমন- নারী ক্ষমতায়ন নিয়ে বলি। কাজী নজরুল ইসলাম, লেপোলিয়ন সহ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অনেক কোটেশন দিয়েছেন, তাই দিয়ে শুরু করুন, সংবিধানে নারীদের নিয়ে ধারা গুলা ঊল্লেখ্য করুন। নারী শিক্ষার অগ্রগতি, দেশের উচ্চপদস্থ পদে নারীদের ভূমিকা লিখুন। নারী দিবসের প্রতিপাদ্যটা লিখুন। আন্তর্জাতিক ভাবে নারীদের জন্য কি কি আইন আছে লিখুন। মূক কথা বইয়ের বাইরে গিয়ে ভিন্ন কিছু লিখুন।
কোটেশন, ডাটা তে আবশ্যই নীল কালি ব্যবহার করবেন।
সময় খুব সীমিত, লিখা হিঊজ, কিভাবে সব লিখবেন সেটা আপনার দ্বায়িত্ব, আগেই প্লান করুণ, কত মার্কের জন্য কত সময় রাখবেন।
পড়া বিশাল, কিন্তু টেকনিক ব্যবহার করে পড়লে কম পড়ে ভালো কিছু সম্ভব । তাছাড়া এত কম্পেটিশনে টিকতে গেলেতো আপনাকে একটু অন্য রকম ভাবে আপনার খাতাটা উপস্থাপন করাই লাগবে। বিশাল বিশাল গাইড বই পড়ে আসলে লাভ হয় না, পরীক্ষার হলে সবকিছু উপস্থিতভাবেই লিখতে হয়, তাই এই সব প্রস্তুতি থাকা ভালো।
“Good Planning is the half way to success”
সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করুণ, পিতা-মাতার সাথে কথা বলুন, টেকনিক্যাল ভাবে কঠোর পরিশ্রম করুণ, সফলতা আসবেই।
সবার জন্য শুভ কামনা।
সৌমেন, বিসিএস_পুলিশ_৩৮ বিসিএস।
No comments:
Post a Comment