বয়স হোক ৩৫-৬৫ বছর

 বয়স হোক ৩৫-৬৫ বছর:





আজ 2021 সালের 24 জুন 2020 সালের 17 ই মার্চ সারা দেশবাসী নতুন এক শব্দের সঙ্গে পরিচিত হয় সেটা হল লকডাউন। আজ 1 বছর 3 মাস 6 দিন হতে চলল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এই আজ খুলছে কাল খুলছে বলে বলে এমন এক দীর্ঘ সময় লকডাউন এর আওতায় গৃহবন্দি হয়ে রইল। নিঃসন্দেহে সরকার এবং প্রশাসনের লোকজন ই ভালো বলতে পারবেন বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ। আমরা সাধারন চোখে যা দেখি লকডাউন এর মধ্যেও বাজার খোলা, যানবাহন চলছে, লোকজন অবাধ গতিতে বাজার করছেন যাতায়াত করছে। সে প্রেক্ষিতে সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতের চেয়ে নির্ভেজাল করনায় যারা আক্রান্ত হয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি দিচ্ছেন তাদের সংখ্যা কি খুব বেশি?  এ প্রেক্ষিতে এ কথা বলার সুযোগ আছে যে লকডাউনে করোনা কমে গেছে হয়তো এর প্রকোপ আরো বাড়তে পারত তার চেয়ে কিছুটা কমে গেছে হয়তো? 

কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদে যে ক্ষতিটা হচ্ছে তারপর কি এর চাইতে বেশী নয়?  শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ দীর্ঘ লকডাউনে একটা জাতি যেভাবে মেধাশূন্য হয়ে যাচ্ছে তার দায়িত্ব কি সরকার বাহাদুর বহন করবেন? তাছাড়া দায়িত্ব বহন করা বা না করাতে কি আসে যায়?  

আমার ছাত্র-ছাত্রীদের পরিবার তার বোঝা বহন করতে পারছে না, প্রচন্ডভাবে মানসিক ট্রমায় আক্রান্ত হচ্ছে চাকরির বয়সসীমা শেষ হয়ে যাচ্ছে অলরেডি প্রায় ২ বছর!? এ ব্যাপারে সরকার কতটুক অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণ করছেন। 

খেটে খাওয়া মানুষ খেতে পারছে না বলে তাদেরকে ত্রাণ দিয়ে বাঁচিয়ে রাখেন কিন্তু মেধার ক্ষেত্রে সরকার কি ধরনের ত্রান দেবেন? যার প্রেক্ষিতে একটা জাতি মেধাহীন অবস্থা থেকে উঠে দাঁড়াতে পারে। উপমহাদেশের প্রায় সব দেশই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে অত্যন্ত অগ্রণী ও জোরালো ভূমিকায় অবতীর্ণ, তারা বুঝতে পারছেন জাতির ভবিষ্যত আমাদের সূর্যসন্তান শিক্ষা থেকে বিমুক্ত হয়ে গেলে বা থাকলে একটা জাতি ধ্বংসের দারগোড়ায় চলে আসবে। সেখান থেকে বাঁচাতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখতে হবে। কিন্তু আমার বাংলাদেশ?! 

যেহেতু এখানে সবাই সচেতন কাজেই তারা নিজেদেরকে যতদূর সম্ভব আত্মরক্ষা করে চলতে পারবে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস। বিশ্ববিদ্যালয় গুলো বন্ধ, পরীক্ষা বন্ধ মেধা নামক গাড়ির চাকা পাংচার!! অথচ এখানেই দেশের সবচেয়ে সচেতন নাগরিক বৃন্দের পদচারণা। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো খোলা যাবে না কিন্তু শহরের প্রতিটি মেস যেখানে ছাত্র-ছাত্রীদের অভয়ারণ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। মেস এর চেয়ে কি হল বা হোস্টেল গুলো বেশী নিরাপদ নয়? মেসে থাকতে পারছেনা শুধু তারাই যাদের বাবার গ্যাটের পয়সা খুব বেশি নেই, যারা সচ্ছল তারা বাড়িতে নয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশে মেস ভাড়া নিয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে আর প্রতিনিয়ত এক ধরনের হতাশা ও দ্বীধাগ্রস্থে আক্রান্ত হচ্ছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও দেশের অভিভাবক সরকারের উচিত এ ব্যাপারে সদয় দৃষ্টি দিবেন বলে আমরা মনে করি। 

সরকার বাহাদুরের কাছে আমার ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য একটা ঘোষণা এখন প্রত্যাশা করছি সেটা হল চাকরির বয়সসীমা 35 বছর করা হোক। এ ঘোষণা হয়তো অনেকেরই প্রাণ বাঁচাবে এবং অনেকের মাঝেই স্বস্তির সুবাতাস বইবে। 

চাকরি বয়স এখন যা আছে তা বাড়িয়ে দিলে সরকারের কোন ক্ষতি আছে বলে আমারে মেধাহীন মাথায় তা মনে হয় না। এখন যেহেতু আয়ুষ্কাল বেড়ে গিয়েছে সেহেতু অবসরকালীন সময়টিকে আরেকটু বাড়িয়ে 62 বা 65 বছরে উত্তীর্ণ করা হোক। 

সোনার বাংলার যেসব মেধাবীরা তাদের মেধা খরচ করে অন্য দেশকে উন্নত করছেন তাদেরকে দেশে ফিরিয়ে আনবার উপযুক্ত কর্ম পরিকল্পনা হাতে নেয়া হোক। 

যুব সমাজ এবং তারুণ্যনির্ভর একটি সত্যিকারের সোনার বাংলা আমরা দেখতে চাই।

✍️✍️

Professor Moni Ferdouse 

Department of Social Work 

University of Rajshahi

No comments:

Post a Comment