"ডাক্তার সাহেব হাতের পঁচা আঙুল ৩টা কাটবেন না😰যদি দেশ স্বাধীন হয় তাইলে দেশের হইয়া ১বার ওপেনিং করমু"
------ক্রিকেটার শহীদ জুয়েল😭😭
------ক্রিকেটার শহীদ জুয়েল😭😭
অামরা অনেকেই জানি, মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে শহীদ জুয়েল ও শহীদ মুস্তাকের নামে দুটি গ্যালারি অাছে। অাসুন জানি কে ছিলেন শহীদ জুয়েল ও শহীদ মুশতাক এবং কেন অামরা পাকিস্তান সাপোর্ট করবো না।
শহীদ জুয়েল ছিলেন জগন্নাথ কলেজের ছাত্র। ছোট বেলা থেকেই ছিলেন ক্রিকেটের প্রচন্ড ভক্ত। ছিলেন তৎকালীন পূর্ব বাংলার সেরা ওপেনার। খেলতেন সেই সময়ের বিখ্যাত ক্লাব অাজাদ বয়েসের হয়ে। অার সেই অাজাদ বয়েজের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন জুয়েলের অারেক বন্ধু শহীদ মুশতাক। মুশতাক এত ভালো মানুষ ছিলো যে তার শত্রুরাও তাকে ভাল বাসতো। কথা বলার সময় হাসি লেগেই থাকতো তার মুখে। জুয়েল ছাড়াও অনেক ক্রিকেটার তৈরির কারখানা ছিলো মুশতাকের অাজাদ বয়েস। সেই অাজাদ বয়েসের হয়েই যাত্রা শুরু করেছিলেন জুয়েল। জুয়েল ব্যাট হাতে ক্রিজে নামলে বোলারদের মুখের উপর পড়ত কালো ছায়া। পড়বেই বা না কেন? জুয়েল ব্যাট হাতে এমন নির্দয়ভাবে বোলারদের বল মাঠের বাইরে অাচড়ে ফেলতেন তা দেখে অনেকের মায়া লাগত। কে জানে সেই সময় যদি টি২০ ক্রিকেট চালু থাকতো জুয়েলই হতে পারতো সেরা ব্যাটসম্যান।
একদিন ঘরোয়া একটি টুর্নামেন্ট খেলতে গিয়েছিল জুয়েল। তার ব্যাটিং দেখে, তার বিখ্যাত সেই স্লগ সুইপগুলো দেখে পাকিস্তানের বিখ্যাত এক ক্রিকেটার বলেই ফেলেছিলেন- "এই ছেলে এখানে কেন, এর তো পাকিস্তানের হয়ে ওপেনিং করার কথা"।
হ্যা, জুয়েলই ছিলো সেই সময়ের সেরা ব্যাটসম্যান। তারপরও তাকে জাতীয় দলে নেয়া হয়নি, দেওয়া হয়নি প্রাপ্ত মর্যাদা। কারণ, সেই একটাই জুয়েল যে বাঙ্গালী, বাঙ্গালিকে তারা মানুষ নয় কুকুরই মনে করত। জুয়েল মনে মনে স্বপ্নন দেখত, একদিন দেশ স্বাধীন হবে, অার বাংলাদেশের হয়ে ওপেনিং করবে জুয়েল।
হ্যা, জুয়েলই ছিলো সেই সময়ের সেরা ব্যাটসম্যান। তারপরও তাকে জাতীয় দলে নেয়া হয়নি, দেওয়া হয়নি প্রাপ্ত মর্যাদা। কারণ, সেই একটাই জুয়েল যে বাঙ্গালী, বাঙ্গালিকে তারা মানুষ নয় কুকুরই মনে করত। জুয়েল মনে মনে স্বপ্নন দেখত, একদিন দেশ স্বাধীন হবে, অার বাংলাদেশের হয়ে ওপেনিং করবে জুয়েল।
১৯৬৯ সাল। দেশজুড়ে চলছে অায়ুব বিরোধী তীব্র অান্দোলন। অার সেই সময়েই পাকিস্তান দলের ওপেনিং ব্যাটসম্যানদের ছিলো চরম ফর্মহীনতা। বাধ্য হয়েই প্রাথমিক দলে রাখা হলো বাঙ্গালি জুয়েলকে। কিন্তু জুয়েল ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করলেন পাকিদের সেই ডাক। যোগ দিলেন বাঙ্গালীর মুক্তির অান্দোলন গন অদ্ভোত্থানে।
১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ। জুয়েল দেখল, যে অাজাদ বয়েসের হয়ে জুয়েলসহ অসংখ্য ক্রিকেটারের হাতেখড়ি হয়েছিল, সেই অাজাদ বয়েসের প্রতিষ্ঠাতা, প্রাণ প্রিয় বন্ধু মুশতাকের নিথর দেহ গড়াগড়ি খাচ্ছে মাটিতে। অার পাশে বসে অাছেন, জুয়েলের অারেক বন্ধু সৈয়দ অাশরাফুল হক ( বর্তমান এসিসির প্রধান নির্বাহী)।
প্রিয়বন্ধু মুশতাককে ছুয়ে জুয়েল শপথ করলেন জীবন দিয়ে হলেও দেশ স্বাধীন করবেন। বন্ধুর রক্তকে বৃথা যেতে দিবেন না।
প্রিয়বন্ধু মুশতাককে ছুয়ে জুয়েল শপথ করলেন জীবন দিয়ে হলেও দেশ স্বাধীন করবেন। বন্ধুর রক্তকে বৃথা যেতে দিবেন না।
৩১ শে মে ১৯৭১ বাড়ির পেছন দিকের দরজা দিয়ে মাকে কিছু না বলেই বেরিয়ে গেলেন জুয়েল। এর কয়েকদিন আগে বলেছিলেন মাকে একটা ছবি দিয়ে– আমি যখন থাকবো না, এই ছবিটাতে তুমি আমাকে দেখতে পাব ।ভারতে গিয়ে ট্রেনিং নিলেন জুয়েল।
ট্রেনিং নিয়ে জুয়েল হয়ে উঠলেন দুর্ধর্ষ ক্রাক প্লাটুনের অন্যতম সদস্য। এই ক্রাক প্লাটুনেরর হয়ে ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় সফল গেরিলা অভিযানে অংশ নেয় জুয়েল। যুদ্ধের এক পর্যায়ে ডান হাতে গুলি লাগে জুয়েলের। হাতের তিনটি অাঙ্গুল প্রচন্ড ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ক্রিকেটকে তিনি কতটা ভালবাসতে
তার একটা প্রমান পাওয়া যায় এই ঘটনার পর যখন তার বোনের সাথে তার দেখা হয়। তিনি তার বোনকে প্রচণ্ড দুঃখ করে বলেছিলেন,দেশ স্বাধীন হলে আমি আবার ক্রিকেট খেলতে পারবো তো?
তার একটা প্রমান পাওয়া যায় এই ঘটনার পর যখন তার বোনের সাথে তার দেখা হয়। তিনি তার বোনকে প্রচণ্ড দুঃখ করে বলেছিলেন,দেশ স্বাধীন হলে আমি আবার ক্রিকেট খেলতে পারবো তো?
১৯শে আগস্ট সিদ্ধিরগঞ্জ পাওয়ার ষ্টেশন অপারেশনের সময় পাকবাহিনীর প্রচণ্ড আক্রমণে তিনি আহত হন। এরপর তাকে মগবাজারে প্রখ্যাত
সুরকার আলতাফ মাহমুদের বাসায় চিকিৎসার জন্য আনা হয়। আলবদরের তৎকালীন সেকেন্ড ইন কমান্ড আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ এই খবরটা পৌঁছে দেয় স্থানীয় পাকিস্তানি ক্যাম্পে।
সুরকার আলতাফ মাহমুদের বাসায় চিকিৎসার জন্য আনা হয়। আলবদরের তৎকালীন সেকেন্ড ইন কমান্ড আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ এই খবরটা পৌঁছে দেয় স্থানীয় পাকিস্তানি ক্যাম্পে।
২৯শে আগস্ট পাকবাহিনী হামলা চালায়
ওই বাড়িতে। আহত অবস্থায় জুয়েলকে ধরে নিয়ে আসে ক্যাম ক্রাক প্লাটুনের তথ্য ও সকলের পরিচয় জানার জন্য প্রচণ্ড অত্যাচার চালানো হয় তার উপর।
ওই বাড়িতে। আহত অবস্থায় জুয়েলকে ধরে নিয়ে আসে ক্যাম ক্রাক প্লাটুনের তথ্য ও সকলের পরিচয় জানার জন্য প্রচণ্ড অত্যাচার চালানো হয় তার উপর।
যে হাত দিয়ে একদিন স্বাধীন বাংলাদেশের ওপেনিং ব্যাটসম্যান হিসেবে প্রতিপক্ষের বোলারদের উপর চড়াও হতে চেয়েছিলেন,সে হাতের দুটো আঙ্গুল কেটে ফেলে পাকিস্তানি হানাদার নির্মম নিষ্ঠুরতায়।
প্রচণ্ড নির্যাতনের মুখেও একটা শব্দও উচ্চারন করেননি তিনি। ৩১ শে আগস্টের পর তাকে আর
খুঁজে পাওয়া যায়নি।
খুঁজে পাওয়া যায়নি।
যে জুয়েল, মুশতাক নিজেদের জীবন দিয়ে পাকিস্তানিদের শোষন বঞ্চণার হাত থেকে অামাদের রক্ষা করে গেল। তাদের স্মৃতির দুটি গ্যালারী স্ট্যান্ডে দাড়িয়ে, তাদের বুকের উপর দাড়িয়ে অাপনি কিভাবে বলেন পাকিস্তান জিন্দাবাদ। তাদের বুকের তাজা রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা ভোগ করে অাপনি কিভাবে পাকিস্তান সাপোর্ট করেন?
যাদের শাসন ও শোষনের বিরুদ্ধে বাংলার দুই সেরা ক্রিকেটার ও সংগঠক জীবন দিয়ে গেল বাঙ্গালীদের ভাল রাখার জন্য। তারপরও বাঙ্গালী চাঁদ তারার পতাকা নিয়ে লাফায়। কেন বাঙ্গালী কেন? এর কোন উত্তর অাপনি দিতে পারবেন??????
তথ্য কৃতজ্ঞতায়- সভ্যতা ব্লগ।
সংগৃহীত
No comments:
Post a Comment